Responsive Advertisement

 

১ম বানী


“তখন যীশু বললেন, পিতঃ ইহাদগিকে ক্ষমা কর, 

কারণ ইহারা কি করিতেছে তাহা জানে না। “

(লূক ২৩;৩৪ পদ, ) 


“ক্ষমা” এটি এমন একটি  শব্দ যেটি সারা পৃথিবীর মধ্যে সকল শব্দের  মধ্যে সবথেকে কঠিন একটা শব্দ।   


আমরা কোনমতেই কাউকে সহজে ক্ষমা করতে পারি না । ক্ষমা এই কথাটা যেন আমাদের ভিতর থেকে আসেই না সামান্য টুকু ভুল সামান্যটুকু অন্যায় কেউ যদি আমাদের প্রতি দোষ করে তাহলে কোন ভাবেই যেন আমরা তাকে ক্ষমা করতে পারি না। কিছু কিছু সময় এমন পরিস্থিতি হয় আমরা তার মুখ দেখতে চাই না আমরা তার কথা শুনতে চাই না। আবার এমনও হয় আমরা বলি যে আমরা তার ছায়া পর্যন্ত ডাঙ্গাতে চাই না।


এই ক্ষমা গুলো করার না করার কারণে অনেক সম্পর্ক গুলো নষ্ট হয়ে যায় এবং সম্পর্কের মাঝে দূরত্ব সৃষ্টি হয় সেটা বন্ধু-বান্ধব হতে পারে,  সেটা পরিবারের কারো সাথে হতে পারে সেটা সমাজের কারো সাথে হতে পারে।


সুতরাং সবকিছু টিকিয়ে রাখার জন্য অনেক ক্ষেত্রে ক্ষমা করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা ভূমিকা রাখে যদি আমরা ক্ষমা করতে না পারি তাহলে আসলে সেই সম্পর্কগুলো আর জীবনের  অধ্যায়গুলো  সঠিক অবস্থায় থাকে না।


আলোচনার বিষয়বস্তু হলঃ

১। আমরা কেন একজন আরেকজনকে ক্ষমা করতে পারি না?

২। আমরা কতবার একজনকে ক্ষমা করতে পারি?

৩। কেন আমরা আরেকজনকে ক্ষমা করব?

৪। প্রভু যীশু কেন তার শত্রুদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন?


১। আমরা কেন একজন আরেকজনকে ক্ষমা করতে পারি না?


ক্ষমা না করার প্রধান কারণগুলো হচ্ছে আমরা দোষ ধরি, আমরা বিচার করি।  সে যেটা করেছে সেটাকে মানতে পারি না এবং আমরা যদি কোন ভুল করে থাকি সে ভুলটাকে আমরা সংশোধন করতে চাই না।


মথি ৭; ১-২ “তোমরা বিচার করিও না, যেন বিচারিত  না হও।  কেননা যে রূপ বিচারে তোমরা বিচার কর,  সেইরূপ বিচারে তোমরাও বিচারিত হইবে; এবং যে পরিমাণে পরিমাণ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের নিমিত্ত পরিমাণ করা যাইবে। “


অর্থাৎ আমরা যদি কারো উপরে কোন কিছু দেখি বা কেউ যদি আমাদের উদ্দেশ্যে কোন অপরাধ মূলক কিছু করে কোন ভুল কোন কাজ করে আমরা সাথে সাথে তার বিচার করতে বসে যাই  তার দোষ গুণ সমস্যার কথা চিন্তা করতে বসে যায় এবং যার কারণে যখন আমরা এই বিষয়গুলো নিয়ে মাথা ঘামায় তখনই আসলে আমরা তাকে ক্ষমা করতে পারি না।  আমরা বলি যে ও এই কাজটা করছে ও ওই কাজটা করছে ওইটা করছে ও সেটা করছে আমার প্রতি অন্যায়টা করছে আমার প্রতি অপরাধ করছে এটা এক ধরনের বিচার করা এবং সাথে সাথে এটা এক ধরনের দোষ ধরা সুতরাং যদি আমরা এই বিচার করা বা এই দোষ ধরা এই বিষয়গুলোতে না যাই তাহলে আমাদের একটা মানুষের পক্ষে আর কোন ধরনের কোন কথা থাকে না এবং এই কথা স্পষ্ট বলে যে,  যে পরিমাণে পরিমাণ কর, সেই পরিমাণে তোমাদের নিমিত্ত পরিমাণ করা যাইবে। “


এই কথার মানে হচ্ছে যে আমরাও কারো না কারো কাছে অপরাধ করে থাকি, কোন ভুল করে থাকি, অন্যায় করে থাকে, অবিচার করে থাকি।  কেউ আমার প্রতি অন্যায় করল আর আমি যে কারো প্রতি করি নাই এমনটা কিন্তু না।  কিন্তু যে আমার প্রতি অন্যায় করেছে শুধু আমি যদি তাকে ক্ষমা করে দেই তাহলে আমি যার প্রতি অন্যায় করেছি সেই লোকটা তো আমাকে ক্ষমা করে দিবে। এটা আমি আশা করতে পারি।  যদি আমি তাকে ক্ষমা না করি তাহলে আমি কিভাবে আশা করি সেই লোকটা বা সে ব্যক্তিটা আমাকে ক্ষমা করবে?

আর প্রভু যীশু খ্রীষ্ট যখন প্রার্থনা শিখিয়েছেন তখন সে প্রার্থনার মধ্যে একটা লাইন তিনি উল্লেখ করে দিয়েছেন “আর আমাদের অপরাধ সকল ক্ষমা কর যেমন আমরাও আপন আপন অপরাধীদের ক্ষমা করেছি”।


অর্থাৎ এইখানে কথা হল যে আমরা পৃথিবীর কারো কাছে অপরাধ না করলেও আমরা একজনের কাছে আমরা সব সময় অপরাধ করে থাকি, তিনি হচ্ছেন আমাদের  স্বর্গস্থ পিতা  সুতরাং তার কাছে আমরা প্রতিনিয়তই অন্যায় করে থাকি, প্রতিনিয়তই আমরা তার বিরুদ্ধে পাপ করে থাকি, এবং আমরা চাই যেন তিনি আমাদের সর্বদা ক্ষমা করে দেন।  তাই প্রভু যীশু খ্রীষ্ট তিনি এই কথা বলেছেন যে যদি আমরা চাই যে ঈশ্বর আমাদেরকে ক্ষমা করে দেন তাহলে  আমরাও যেন আমাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, আমাদের বিরুদ্ধে যারা অন্যায় করে, আমাদের বিরুদ্ধে যারা অবিচার করে, তাদের বিরুদ্ধে কোন ধরনের  কথা না রেখে আমরা তাকে ক্ষমা করে দেই।

 

২। আমরা কতবার একজনকে ক্ষমা করতে পারি?


অনেক সময় আমাদের অভিযোগ থাকে যে এই লোকটি আমার বিরুদ্ধে বার বার অন্যায় করেছে। তার মানে আমি তো কতবার তাকে ক্ষমা করে দিয়েছি আবার তাকে সুযোগ দিয়েছি, তাহলে কি আমি তাকে বারবার ক্ষমা করে দিব আমার পক্ষে সম্ভব না।  তাহলে আসলে কতবার একজন ব্যক্তিকে আমরা ক্ষমা করে দিতে পারি?


  মথি ১৮; ২২ পদ  “যীশু তাহাকে কহিলেন,  তোমাকে বলিতেছি না  সাতবার পর্যন্ত কিন্তু  ৭০ গুণ সাতবার পর্যন্ত।


অর্থাৎ এইখানে একটা সংখ্যা গণনা করে দেওয়া আছে আর যার মধ্যে বলা আছে যে ৭০ গুণ ৭ বার যদি কেউ আমাদের প্রতি অন্যায় করে তাহলে আমরা তাকে ক্ষমা করে দিব।  এই সংখ্যাটা অনেক বড় একটা সংখ্যা এবং যদি এই সংখ্যা দিয়ে আমাদের জীবনের প্রত্যেকটা সেকেন্ড কে ভাগ করা হয় তাহলে একটা মানুষ প্রায় ১২০ বছর থেকেও বেশি সময় সে বেঁচে থাকবে। অর্থাৎ যদি একটা মানুষের প্রত্যেক সেকেন্ডে কারো সাথে কেউ অন্যায় করে তাহলে  একজন মানুষকে আমাদের ক্ষমা করে দেওয়া উচিত।


এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বলতে পারি যদি জগতের মানুষ আমাদের একটা ভুলের জন্য বা একটা অপরাধের জন্য বা পাঁচটা অপরাধ দশটা অপরাধের জন্য আমরা তাকে ক্ষমা করতে পারি না। সে আমাদের প্রতি বারবারই  যে অন্যায় করে তার জন্য আমরা ক্ষমা করতে পারি না । কিন্তু আমরা স্বর্গস্থ পিতার কাছে আমরা সবসময় অন্যায় করে থাকি, অপরাধ করে থাকি, তাঁর বিরুদ্ধাচারণ করে থাকি, সে আমাদের যেটা করতে বলে সেগুলো না করে আমরা সব সময় তাকে গুরুত্ব দেই না।  তাহলে এটা কি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না যে আমরা আমাদের পিতার নিকট আমরা আমাদের  স্বর্গস্থ  পিতার নিকট যখন আমরা প্রতিনিয়ত অপরাধ করি তখন তিনি আমাদের প্রতি নিয়ত ক্ষমা করে দেন। আমরা তার কাছে সবসময় ক্ষমা ভিক্ষা চাই অর্থাৎ আমাদের জীবনে প্রত্যেকটা সেকেন্ডে সেকেন্ডে যখন আমরা অপরাধ করি  তখন তাঁর কাছে ক্ষমা চাইলে ঈশ্বরকে আমাদেরকে ক্ষমা করেন। তাই আমাদের উচিত আমাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে যে আমাদের বিরুদ্ধে যারা অন্যায় করে অবিচার করে আমাদেরকে কষ্ট দেয় যন্ত্রণা দেয় তাদের প্রত্যেককে আসলে ক্ষমা করে দেয়া দরকার।


 

৩। কেন আমরা আরেকজনকে ক্ষমা করব?


রোমিও ১২; ১৯ পদ   “হে প্রিয়েরা, তোমরা আপনারা প্রতিশোধ লইও না,  বরং  ক্রোধের জন্য স্থান ছাড়িয়া দেও, কারণ লেখা আছে “প্রতিশোধ লওয়া আমারই কর্ম,   আমিই প্রতিফল দিব, ইহা প্রভু বলেন।“


পবিত্র বাইবেল বলে প্রতিশোধ নেওয়া ঈশ্বরের কাজ। আমাদের সেখানে কোন কাজ নেই। তাই প্রাথমিক অবস্থায় যদি আমরা এটা বলি যে প্রতিশোধ নেওয়া  বা প্রতিফল দেওয়া এটা ঈশ্বরের কাজ তাহলে সেই ক্ষেত্রে আমাদের কারো বিরুদ্ধে কোন কথা থাকতে পারে না।  আমরা তাকে বলতে পারি যে তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন কথা নাই এবং তাদের বিরুদ্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই।  যদি এই কথাটা বলি এটা মানে হচ্ছে যে আমরা তাকে ক্ষমা করে দিচ্ছি। অর্থাৎ যখন আপনি তার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের অভিযোগ না রাখবেন, তার বিরুদ্ধে যখন কোন কথা না রাখবেন, যদি সে পরিবর্তিত না হয় বা সে যদি বারবার সেই অন্যায়টা বা ভুলটা আপনার সাথে করতে থাকে তাহলে  তার প্রতিফল সে নিজেই ভোগ করবে।  কারণ এই প্রতিফলটা ঈশ্বরই তাকে দিবেন। কিন্তু সেইখানে যদি আপনি ক্ষমা না করে আপনি প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য বা আপনি প্রতিফল দেবার জন্য কোন ধরনের প্রচেষ্টা করেন তাহলে সেটাই আপানার জন্য অন্যায় হবে। তাই কোন ধরনের প্রতিফল বা প্রতিশোধ নেবার মনোভাব না রেখে আমাদের দরকার তাদেরকে ক্ষমা দেওয়া।


এখানে বিষয়টি হচ্ছে যে ক্ষমা করে দেওয়া এর প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে কারো প্রতি কোন ধরনের প্রতিশোধ বা প্রতিফল দেয়ার মনোভাবটাকে না রাখা। এটি হচ্ছে আসলে ক্ষমা।  কিন্তু একটা লোক যদি বারবার আপনার সাথে অন্যায় করে আপনি যদি বুঝতে পারেন সেই লোকটি দুষ্টু এবং সেই লোকটি আপনার উপর অত্যাচার করবেই, আপনার উপর অন্যায় করবে, তখন আপনি কি করবেন? তখন আপনাকে এইটাই করতে হবে যে আপনার তার থেকে দূরে সরে থাকতে হবে। যদি দূরে সরে থাকেন তাহলে সে আপনার প্রতি অন্যায় করার সুযোগ পাবে না।


মথি ১০; ১৬ পদ, “অতএব তোমরা সর্পের ন্যায় সতর্ক কপোতের ন্যায় অমায়িক হও।“

অর্থাৎ আমাদের বন্ধুসুলভ আচরণও করতে হবে এবং আমাদের নিজেদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে। এজন্য যখন আমরা কারো সাথে থাকি বা কারো সাথে চলাফেরা করি যদি বুঝতে পারি যে এই লোকটি আমার জীবনের জন্য সুবিধা জনক নয় তার দ্বারা আমার কোন ক্ষতি হতে পারে আমার প্রতি সে কোন ধরনের অন্যায় করতে পারে তখন তার কাছ থেকে সরে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের মত কাজ এবং সেই ক্ষেত্রে তার সাথে আমরা ভালো ব্যবহার করতে পারি কিন্তু আমাদের অবস্থানগুলো ঠিকঠাক মতো রেখেই আমাদের তার সাথে চলা এবং কথাবার্তা উচিত যাতে করে সে আমার প্রতি কোন ধরনের অন্যায় করার সুযোগ না পায় এবং আমারও কোন না কোন ভাবে তার প্রতি অভিযোগ করারও সুযোগ না থাকে।  

প্রকৃতপক্ষে কারো প্রতি কারো প্রতি প্রতিশোধ বা প্রতিফল না নেওয়ার মনোভাবটাই হচ্ছে আসলে ক্ষমা

 


৪। প্রভু যীশু কেন তার শত্রুদেরকে ক্ষমা করে দিয়েছিলেন?


যোহন ৫;২২ পদ  “কারণ পিতা কারো বিচার করেন না কিন্তু সমস্ত বিচার ভার পুত্রকে দিয়েছেন”।

প্রভু যীশু তার বিচার করার ক্ষমতা থাকলেও সে সেসময় কারো বিচার করেননি। কারণ তিনি যদি বিচার করতেন তাহলে তার সম্মুখে কেউই দাঁড়াতে পারতো না।   আর তিনি যেটা শিষ্যদেরকে সবসময়  বলেছেন এবং যে শিক্ষাগুলো দিয়েছেন তার মূল্যে ছিল ক্ষমা করা এবং ঈশ্বরের সান্নিধ্যে থাকা। সুতরাং এখন যদি সে তার বিরুদ্ধে যারা অন্যায় করছে তাদেরকে ক্ষমা না করতেন তাহলে এই যে ক্ষমার বানি অর্থাৎ সে যখন আগে যে কথাগুলো বলেছে, আগে যে ক্ষমার  কথাগুলো বলেছে যে শিক্ষাগুলো কি দিয়েছিলেন সেই শিক্ষাগুলো বিফলে চলে যেত এবং কেউই তার শিক্ষাগুলোকে গ্রহণ করত না। সুতরাং এইখানে  µz‡k বসে ক্ষমার আদেশটা দেওয়া  একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল। 

 

প্রভু যীশুখ্রীষ্ট তিনি দেখিয়েছেন যে শত কষ্ট দুঃখের মাঝে যত যন্ত্রণা এবং লাঞ্ছনার মাঝেও আমাদের উচিত একজন আরেকজনকে ক্ষমা করে দেওয়া কারণ যারা অন্যায় করছে তারা যদি জানতো যে আসলে তারা কি করছে তাহলে তারা সে অন্যায় ঠিক করত না, আর এজন্য তিনি এই কথা বলেছেন “পিতঃ ইহাদগিকে ক্ষমা কর, কারণ ইহারা কি করিতেছে তাহা জানে না। “ অর্থাৎ তিনি ভালো করে জানতেন যে সেইখানে যারা ছিল তারা কেউই জানে না যে আসলে তাদের ভুলটা কোথায় কি কারনে যীশুকে তারা µz‡k দিয়েছে। 

 

সুতরাং এই সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে গিয়েই প্রভু যীশুখ্রীষ্ট তিনি জানতেন যে তারা যেটা করছে তারা আসলে সেটা জানে না যে আসলে কি করছে তাদের প্রতিফলন কি হবে ঠিক তদ্রুপভাবে আমাদের প্রতিও যারা অন্যায় করে আমাদের প্রতিও যারা অবিচার করে আমাদের আঘাত করে আমাদেরও এই প্রার্থনা করা উচিত পিতার কাছে প্রার্থনা করে তাদের জন্য  ক্ষমা  চাওয়া। কারণ তারা কি করছে সেটা যদি সে বুঝতে পারত তাহলে তারা আর সেই কাজটা করত না।


তাই আমাদের উচিত যেন আমরা আমাদের প্রতি যারা অন্যায় করে তাদের উপরে কোন ধরনের প্রতিফল বা প্রতিশোধ নেওয়ার মনোভাব না রেখে আমরা যেন তাদেরকে ক্ষমা করে দেই এবং ঈশ্বরের কাছে সে প্রতিফল বা প্রতিশোধ নেবার দায়িত্বটা ছেড়ে দেই।  

___________________________________








No comments:

Post a Comment

The LifeBread Production

Jesue Said, "I am the bread of life. Your ancestors ate the manna in the wilderness, yet they died. But here is the bread that comes down from heaven, which anyone may eat and not die. I am the living bread that came down from heaven. Whoever eats this bread will live forever. This bread is my flesh, which I will give for the life of the world.” John 6:48-51




Comments

Contact Form

Name

Email *

Message *